আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে অনুমতির বৈধতা ও অবৈধতার মারপ্যাচে বন্দী হয়ে লেভেল ক্রসিংয়ের কারণে অরক্ষিত রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগ।
রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগে লেভেল ক্রসিং চলছে গেটম্যান ছাড়াই। পাশাপাশি আছে অবৈধ ক্রসিং। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি অনুমতি না নিয়ে বিভিন্ন বিভাগ এসব লেভেল ক্রসিং তৈরি করেছে। বৈধ-অবৈধ এসব লেভেল ক্রসিংয়ে গেট ও গেটম্যান না থাকায় ট্রেনের হুইসেলই ভরসা। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। জীবনহানি ছাড়াও মালামাল ধ্বংস ও নষ্ট হচ্ছে ট্রেনের সম্পদ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈধ-অবৈধতার ম্যারপ্যাঁচ নয়, সড়ক নির্মাণ যারাই করুক না কেন ক্রসিংয়ে গেটম্যান ও গেট নির্মাণের দায়িত্ব নিতে হবে রেল কর্তৃপক্ষকেই।
সূত্র জানায়, রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগের অধীনে ৫৪০ কিলোমিটার রেললাইনের ৪১৫টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ৩৩টি লালমনিরহাটে, ৩২টি কুড়িগ্রামে, ৩৯টি রংপুরে, ৪১টি বগুড়ায়, ৪৬টি দিনাজপুরে, ২৮টি গাইবান্ধায়, ৩৯টি পঞ্চগড়ে এবং ৩৯টি ঠাকুরগাঁও জেলায়।
রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশন অফিস সূত্র জানায়, অরক্ষিত ২৯৭টি রেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ১১১টি অবৈধ। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করেই সড়ক ও জনপথ, এলজিইডি, জেলা পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ বিভিন্ন সময়ে রেললাইনের ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে এসব লেভেল ক্রসিং সৃষ্টি করেছে। রেললাইনের ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করতে হলে রেলওয়ের অনুমোদন নেয়ার বিধান থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো সেই অনুমোদনের তোয়াক্কা করে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অরক্ষিত সব ক্রসিং স্পটের উভয় পাশে কর্তৃপক্ষ সতর্কতা সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দিলেও ছোট-বড় দুর্ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। তাদের প্রায় সবাই ক্রসিং পার হতে যাওয়া বাস, মাইক্রোবাস ও ছোট যানবাহনের আরোহী। রেলক্রসিং পারাপারের সময় যেসব পথচারী প্রাণ হারান, সেই হিসাব রেল কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করে না।
এক হিসাবে দেখা গেছে, রেল দুর্ঘটনায় যত প্রাণহানি হয়, তার ৮৯ শতাংশই ঘটে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে।
রেল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাহারাদার ছাড়া কোনো লেভেল ক্রসিং রাখার অর্থই হলো এখানে প্রাণ ঝরবে। এটা জেনেও যদি কেউ সুরক্ষার ব্যবস্থা না নেন তাহলে তো বলতে হবে মানুষের মৃত্যুতে তাদের মাথাব্যথা নেই। সড়ক ও রেল দু’টিই জনগণের জন্য এবং তাদের টাকায় নির্মাণ করা হয়। ফলে সুরক্ষা তাদের প্রাপ্য।